এসএসসির প্রশ্নফাঁস নিয়ে মামলায় যা বলা হয়েছে

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গতকাল কেন্দ্র সচিব ও প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে আদম মালিক চৌধুরী ভূরুঙ্গামারী থানা থেকে সীলমোহর অক্ষত অবস্থায় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র প্রশ্নের দুটি প্যাকেট সংগ্রহ করেন। পরে তাঁরা প্রশ্নপত্র নিয়ে নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আসেন। কেন্দ্র পৌঁছানোর পর লুৎফর রহমান তাঁর নিজ কক্ষের একটি বইয়ের তাকে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট দুটি রাখেন। পরে আনুমানিক সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে আদম মালিক চৌধুরী কেন্দ্র সচিবের কক্ষে যান। এ সময় কেন্দ্র সচিব প্যাকেট খুলে প্রশ্নপত্র বের করেন। পরে ১০টা ৫০ মিনিটে প্রশ্নপত্রগুলো কেন্দ্রের কক্ষভিত্তিক দায়িত্বরত শিক্ষকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এজাহারে আদম মালিক চৌধুরী উল্লেখ করেছেন, ওই দিন আনুমানিক বেলা দেড়টার দিকে তিনি ওই কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে বলে জানতে পারেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার শর্মাকে জানান। পরীক্ষা শেষে ইউএনও দীপক কুমার শর্মার উপস্থিতিতে লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে লুৎফর কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে লুৎফর স্বীকার করেন, তাঁর কাছে পরের একাধিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আছে। এরপর লুৎফর রহমানের কক্ষের বইয়ের তাক থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগ পাওয়া যায়। ওই ব্যাগের ভেতর থেকে গণিত, উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের প্রশ্নপত্রের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি প্যাকেট ছাড়া সব কটি প্যাকেটের মুখ খোলা ছিল।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ভূরুঙ্গামারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাঈদ মো. আতিক নুর প্রশ্নপত্রগুলো জব্দ করেন। পরে তিনি লুৎফর রহমানকে আটক করেন। এ সময় লুৎফর রহমানকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু হানিফের সহায়তায় কৌশলে প্রশ্নপত্রের প্যাকেটগুলো কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। পরে প্রশ্নপত্রগুলো আবু হানিফ, অন্য দুই শিক্ষক জোবাইর হোসেন, আমিনুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনের মাধ্যমে গোপনে প্রশ্নগুলো ফাঁস করে দেওয়া হয়।

এদিকে এই মামলায় এখন পর্যন্ত কেন্দ্র সচিবসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক হামিদুর রহমান ও মো. সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মোরশেদুল হাসান বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে তিন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

মামলার বিষয়ে জানতে বাদী মো. আদম মালিক চৌধুরীকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*